একটি কৌতুক ও কিছু কথা

একটি কৌতুক ও কিছু কথা
কাফি রশিদ, ৯/৯/১২


মায়েজ মিয়া হাটে আসছেন ঘোড়া কিনতে। হাটে ঘুরতে ঘুরতে কোন ঘোড়া পছন্দ হয়না। পাশের গ্রামের ইমাম হাসান সাহেবের সাদাকালো ঘোড়াখানা পছন্দ হয়ে গেলো মায়েজ মিয়ার। চিন্তা করলো ইমাম সাহেব খোদাভীরু লোক, তার ঘোড়াও নিশ্চয়ই শান্তশিষ্ট হবে। দরদাম করে কিনে নিলেন মায়েজ মিয়া।

ঘোড়ায় চড়ার আগে ইমাম সাহেব বললেন, “মায়েজ মিয়া, আমার ঘোড়াখানা আমার বড় আস্থাভাজন ছিলো। আমি সবসময় খোদাতালা’র নাম নিয়া ঘোড়ায় চড়ছি। তুমি ঘোড়ায় চড়ার পর বলবা ‘সুবহানআল্লাহ’, তাইলে ঘোড়া হাটা শুরু করবো। ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে দৌড় দিবো, আর থামার জন্য বলবা ‘আল্লাহু আকবর’। কষ্ট কইরা তোমারে রশি টানাটানি করতে হইবো না।”

মায়েজ মিয়া খুশি হয়ে ঘোড়ায় চড়ে বসলো, বললো ‘সুবহানআল্লাহ’। ঘোড়া হাটা শুরু করলো, মায়েজ মিয়ার খুশি দেখে কে! কিছুক্ষণ পর বললো ‘আলহামদুলিল্লাহ’। ঘোড়ার কি সাংঘাতিক দৌড়! আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ করতে করতে একসময় খেয়াল হলো ঘোড়া পাহাড়ের চূড়ায় চলে এসেছে। আতঙ্কে সব ভুলে গেলো মায়েজ মিয়া। আগডুম বাগডুম, চিচিং ফাঁক, আব্রা কা ডাব্রা, কোন কিছুতেই কাজ হয়না। একেবারে কিনারায় আসার পর মনে পরলো সেই মন্ত্র, জোরে বললো ‘আল্লাহু আকবার’। পাহাড়ের কিনারার এক হাত সামনে থেকে ঘোড়া থেমে গেলো।

“আরেকটু হইলে গেছিলাম” বলে আকাশের দিকে তাকিয়ে নিঃশ্বাস নিতে নিতে আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করার কথা মনে পরলো মায়েজ মিয়ার। যেই ভাবা সেই কাজ, আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বললেন, “আলহামদুলিল্লাহ......!”



অ্যারাবিক শব্দ “হাসান” এর বাংলা অর্থ “ঘোড়া”, আর “মায়েজ” এর অর্থ “ছাগল”। সবার উচিৎ অর্থ জেনে নাম রাখা। “মোহাম্মদ বিড়াল” বললে স্বদেশী কার্টুনিস্টের জেল জরিমানা হয়ে যায়, অথচ আপনারা “মুহম্মদ ঘোড়া”, “মুহম্মদ ছাগল” নাম রাখলে আর প্রকাশ্যে তা বললে কোন দোষ হয়না। দুনিয়া বড় আজব জায়গা রে ভাই!

আপডেট : শব্দটা আসলে "হাসান" না, "হাছান" হবে। দুইটার উচ্চারণগত পার্থক্য ত্যামন বেশি মনে না হওয়ায় "হাসান" লিখেছি। সোর্সও (ডকুমেন্ট ও মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানকারী ব্যক্তি) হাসান ও হাছানের পার্থক্য করেনি। যাই হোক, পোষ্টের মূল বিষয় কৌতুকটাই ছিলো।