ঈশ্বর কি প্রকৃতই সবজান্তা, ভাগ্যনিয়ন্তা?

ঈশ্বর কি প্রকৃতই সবজান্তা, ভাগ্যনিয়ন্তা?
কাফি রশিদ, ২২/৯/১২

গুণীজনেরা বলেন খোদাতালা মানুষের ভাগ্য তার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন, সাথে যোগ করেন মানুষ যা করে তা উনার ইচ্ছাতেই করে। যখন বলা হয় মানুষ যেহেতু খোদার ইচ্ছাতেই সব করে, তাহলে খারাপ কাজের দায়-দায়িত্বও খোদার, পরকালে এর জন্য শাস্তি প্রদান অযৌক্তিক। তারা তখন রীতিমতো ডিগবাজি খেয়ে দাবী করেন এইসব আসলে রুপকার্থে ব্যবহৃত হয়েছে, ভাগ্য গলায় ঝুলানো বলতে বোঝানো হয়েছে মানুষকে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়া হয়েছে, মানুষ নিজেই তার ভাগ্যনিয়ন্তা। আর আল্লাহর ইচ্ছায় কাজকর্ম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন আল্লাহ মানুষকে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ভার দিলেও ফলাফল তিনি আগে থেকেই জানেন, যেভাবেই ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করুক না ক্যানো ফলাফল তো পরম নিয়ন্ত্রকের ইচ্ছাতেই হচ্ছে।

তাহলে ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়ার উদ্দেশ্য কী? ফলাফল যদি নির্ধারিতই থাকে তাহলে ভাগ্য নিয়ন্ত্রন করে কী হবে? এর উত্তরে কেউ কেউ বলেন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষ স্বাধীন, তাকে ভালো-খারাপ কাজের জ্ঞান দেয়া হয়েছে, সে তার জ্ঞানের দ্বারা কৃতকর্মের ফল লাভ করবে। এই দাবী আগের সব কথার সাথে সাঙ্ঘর্ষিক। মানুষ স্বাধীন হলে কেবল ভাগ্যতত্ত্বই বাতিল হয়ে যায় না, সাথে খোদাতালার সবজান্তা, ভবিষ্যত দ্রষ্টা, সর্ব নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি বিশেষণও বাতিল হয়ে যায়।

যখন পৃথিবীতে একটাও মানুষ থাকবেনা খোদার নাম নেয়ার মতো, পাপাচারে যখন দুনিয়া ভরে যাবে, তখন এক নবীর পুনরুত্থান ঘটবে এবং পুনরায় তার বাণী প্রতিষ্ঠিত হবে, এরপর কেয়ামত হবে। তাহলে বলা যায় খোদা আগে থেকেই জানেন সব মানুষ তার বিরুদ্ধে যাবে, এজন্য তিনি কেয়ামতের দিনও ফিক্স করে রেখেছেন। আদম-হাওয়ার ভুলও খোদার ইচ্ছাতেই হয়েছে, তা না হলে এই দুনিয়া সৃষ্টি ও ধ্বংস হবে না। আদম-হাওয়া স্বাধীন ইচ্ছায় চললে খোদার এই বিশাল প্ল্যান মিথ্যা হয়ে যেত। তাহলে বলা যায় তিনি আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা দিয়েছেন ঠিকই, তবে ফলাফল তার জানা। ঠিক এইরকম,

প্রশ্ন: প্রথম নির্বাচন শুরু হয়েছিলো কবে?
উত্তর: ইশ্বর যখন আদমের সামনে হাওয়াকে এনে আদমকে বললেন, যাও তোমার পছন্দমত স্ত্রী খুজে নাও।

ফলাফল সবজান্তা সর্বনিয়ন্ত্রক খোদার হাতেই থাকলো, আদমকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগও দেয়া হলো!