দেশপ্রেমিকের প্রকারভেদ/কিভাবে হবেন দেশপ্রেমিক

দেশপ্রেমিকের প্রকারভেদ/কিভাবে হবেন দেশপ্রেমিক
কাফি রশিদ, ১২/১০/১২

আওয়ামী দেশপ্রেমিক : একবার বাংলাদেশের নাম নিন, দুইবার মুক্তিযুদ্ধের নাম, তিনবার পাকিস্তানের নাম, হয়ে যাবেন আওয়ামী ঘরানার দেশপ্রেমিক। কথায় কথায় পাকিস্তানের মুন্ডুপাত করা আবশ্যক। প্রথমআলো'র খেলার যেকোন সংবাদে য্যামন পাকিস্তান থাকবেই, আওয়ামী দেশপ্রেমিকের মুখেও কারণে-অকারণে পাকিস্তান আসবেই। এরা ধর্মীয় দলগুলোকে ব্যবসায়ী আখ্যায়িত করলেও নিজেরা যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ফায়দা লুটে তা বুঝতে চায় না। এরা জিঙ্গোয়িস্ট টাইপের দেশপ্রেমিক। মোটামুটি সবার মধ্যে নার্সিসিস্টিক পারসোনালিটি বিদ্যমান। পছন্দের রঙ : সাদা-কালো।

জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক : উন্নত ও আধুনিক বাংলাদেশ, এনশা-আল্লাহ, চাঁদ সম্পর্কিত শব্দ য্যামন জোয়ার-ঈদ, তরুণ, ফ্যাসিবাদী, খাল খনন করে দেশের উন্নয়নের উপায়, রোদচশমার উপকারিতা ইত্যাদির উপর আলোকপাত করুন। সুবিধাবাদকে জাতীয়তাবাদ দিয়ে প্রতিস্থাপন করুন। আপনার জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক হওয়া আর ঠেকায় কে? এদের বেশিরভাগই দুপুরে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়ে। পছন্দের রঙ : গোলাপী।

বাম দেশপ্রেমিক : খুঁজতে থাকুন কোন বিষয়ের উপর সরকারী ও বিরোধীদলের নজর নাই। সেই বিষয়টা পেলে ঝাপিয়ে পরে চিক্কুর দিন দেশের উপর সামন্তপ্রভুদের নজর পরেছে, সরকার দেশটাকে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার হাতে লুটেপুটে খাওয়ার জন্য তুলে দিচ্ছে, বিরোধীদল পেমেন্ট পেয়ে কোন প্রতিবাদ করছে না। লাল সূতা বের করে দেয়ার হুমকি দিন। একবেলা শাহবাগে গিয়ে নাস্তা করতে পারেন। পছন্দের রঙ : লাল।

সাধারণ দেশপ্রেমিক : এরা আত্মগোপনে থাকে। খুব বেশি তথ্য জানা যায়না এদের সম্পর্কে। যতদূর জানা যায় এরা রোদচশমা না পড়েই ক্ষেতে-খালে নেমে যায়, দিনে একবার দেশের নাম না নিলেও দেশের মানুষের জন্য প্রতিদিনই খেঁটে যায়, "পাকিস্তান" এর মতো অশ্লীল শব্দ বছরে একবারও উচ্চারণ করে না। এরা বংশপরম্পরায় বিশ্বাসী। তাদের মধ্যকার কয়েকজনকে চিহ্নিত করার একমাত্র উপায় কাকে ভোট দিবে জিজ্ঞেস করা, যদি বলে শেখের বেটিকে, তাহলে ধরে নিতে পারেন এরা সাধারণ দেশপ্রেমিক, কারণ এরা খুব বোকা কিসিমের, চল্লিশ বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তন এরা টের পায়না। সবই নিজেদের ভাগ্য বলে মেনে নেয়। পছন্দের রঙ : সোনালী, সবুজ।

এদের বাইরে আমজনতা, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সমর্থক ও স্বাধীনতাবিরোধী শ্রেণীর অস্তিত্ব আছে। তবে এরা দেশপ্রেমিকের পর্যায়ে পরে না। প্রত্যেকে সুবিধাবাদী হলেও এদের মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য থাকায় সবাইকে একসাথে "সুবিধাবাদী দেশপ্রেমিক" শ্রেণীতেও ফেলা যায় না।